ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম। চিয়া সিডকে আমরা বলি সুফারফুড। আমরা অনেকে
জানিনা যে চিয়া সিড খেলে কি হয় আপনি জানলে অবাক হবেন যে চিয়া সিড খেলে আপনার ওজন
একদম কমে যাবে। চিয়া সিড যাদুর মতন কাজ করে ওজন কমাতে। এটি এমন একটি বীজ যা ওজন
কমাতে ডাক্তাররা নিজেই চিয়া সিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
ওজন আপনার সত্যি কমে যাবে যদি প্রতিদিন এই বীজ খেতে পারেন। শুধু ওজন কমাতে না
শরীরের আরো নানা সমস্যাই চিয়া সিড গুরুত্বপূর্ন কাজ করে। এখন আমরা চিয়া সিড খওয়ার
নিয়ম ওজন কমাতে কিভাবে কাজ করে কতদিনে আপনার ওজন কমবে তা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ধৈর্য সহকারে পরার অনুরোধ রইলো।
পেজ সূচিপত্রঃ ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
নিচের যেকোন অংশ পড়তে ক্লিক করুন
- ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারীতা
- চিয়া সিড খাওয়ার অপকারীতা
- ওজন কমাতে চিয়া সিড খওয়ার নিয়ম ও উপকারীতা
- ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার সময়
- গর্ভাবস্থাই চিয়া সিড খওয়ার নিয়ম
- চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে
- চিয়া সিড খেলে কি হয়
- চিয়া সিড এর বাংলা নাম
- চিয়া সিড দাম কত কোথাই পাওয়া যায় 2024
- ওজন কমাতে চিয়া সিড এর শেষ কথা।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারীতা জেনে নিন
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার করে তা
আপনার ধারোনার বাইরে। চিয়া সিড হলো একটি বীজ যা তীলের খাজার মতো দেখতে। এটি
মূলত ভেষজ উদ্ভিদ যা মরুভূমিতে বেশি জন্মায় তবে এটি অ্যামেরিকা ও মেক্সিকোতে
চিয়া নামে এক ধরনের গাছ হয় সেই গাছ থেকেই বীজ বের হয় সেটাই চিয়া বীজ।
চুলুন নিচে দেখে নি কি কি উপকার করে এই বীজ।
- শরীরে প্রচুর শক্তি
- হৃদরোগের ঝুকি ও কোলেস্টেরল কমায়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
- ওজন কমায়
- ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়
- হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
- শরীরে টক্সিন বের করে
- ত্বককে সুন্দর করে
- গ্যাসের সমস্যা দূর করে
- ভুড়ি কমাতে চিয়া সিড
শরীরে প্রচুর শক্তি যোগানঃ চিয়া সিড শরীরে প্রচুর শক্তির যোগান
দেয় কারন এতে রয়েছে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ। আরো রয়েছে দুধের চেয়ে ৫ গুন বেশি
ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-সি, ৩ গুন বেশি আয়রন, দিগুন পটাশিয়াম, মুরগির ডিমের চেয়ে
৩ গুন বেশি প্রোটিন, মাছের চেয়ে ৮ গুন বেশি রয়েছে ওমেগা-৩।
হৃদরোগের ঝুকি ও কোলেস্টেরল কমায়ঃ চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর
পরিমানে ফাইবার যা পিত্ত অ্যাসিডের সাথে মিশে এবং শরীর থেকে অ্যাসিড বের করে
এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নিম্ন রক্তচাপ
এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তাই খাবারে প্রতিদিন দুই চামচ চিয়া সিড রাখতে
পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুন বাগিয়ে দেয়। তাই
প্রতিদিন আপনার খাবারে দুই চামচ চিয়া সিড রাখতে পারেন। তাতে আপনার রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমাত বারবে সহজে অসুস্থ হয়ে পরবেন না।
ওজন কমায়ঃ যারা ওজন কমানোর জন্য চিয়া সিড খেতে চান আপনার ওজন
কমবে দ্রুত। এতে রয়েছে প্রধান উপকরন ফাইবার, প্রোটিন, স্বাস্থকর চর্বি যা
সংমিশ্রনে ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নতি করার মাধ্যমে
আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। অন্যান্য ক্যালোরি যেইগুলোতে শরীর মোটা করে সেই
ক্যালোরি গুলোকে বাধা দেয় ফলে আপনার শরীরে ওজন বাড়াতে দেয় না স্বাভাবিক রাখে।
আপনার অতিরিক্ত খাওয়ার যেই অভ্যাস রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ রাখে।
ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়ঃ চিয়া সিড রক্তের শর্করার বা চিনির
মাত্রা বাড়তে দেয়না ফলে আপনার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রন থাকে। যাদের ডায়াবেটিস
রয়েছে চিয়া সিড খাবেন। কারন চিয়া সিডের ফাইবার কার্বোহাইড্রেট হজম এবং শোষন
গতী কমিয়ে দেয় যার কারনে রক্তে চিনির মাত্রা কম যায়। গবেষণায় দেখা যায় চিয়া
সিড খেলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে যার ফলে আপনার চিনির মাত্রা
নিয়ন্ত্রন থাকে।
হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করেঃ চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমানে
ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ সহ আরো অনেক খনিজ যা হাড়ের
স্বাস্থ্য রক্ষাই বেশ উপকারী। এই খনিজ গুলো হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে
গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। খনিজ গুলো আপনার হাড়ের অস্টিওপরোসিস ও
ফ্র্যাকচারের মতোন সমস্যা গুলো সহজে হয় না।
অনেকে আছেন যারা হাড়ের সমস্যাই ভুগেন বয়স হয়ে গেলে হাড়ের ব্যাথাই দাড়াতেই
পারেনা তাছাড়া হাড়ের নানা সমস্যাই ভুগে থাকেন। তারা চাইলে চিয়া সিড খাবারে
যুক্ত করতে পারেন এতে আপনার হাড়কে ঠিক রাখবে হাড়কে যতটা পারে শক্তিশালী করে
তুলতে পারে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে চিয়া সিড বীজের ভূমিকা ব্যাপক।
শরীরে টক্সিন বের করেঃ চিয়া সিডে প্রচুর পরিমানে
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের করে দেয় এবং শরীরে
চাপ ও প্রদাহ কমিয়ে দেয়। এতে রয়েছে কোয়েরসেটিন, ক্যাফেইন অ্যাসিড, কেমফেরল ও
ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড থাকে যা শরীরের সবরকম দূষিত টক্সিন বের করে।
ত্বককে সুন্দর করেঃ চিয়া সিডে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যসিড যা
আপনার ত্বককে যে কোন ধরনের ক্ষতি বা ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। রাস্তার দূষন বায়ু
ইত্যাদি সমস্যার প্রতিরোধ করে চিয়া সিড। এছাড়াও এত রয়েছে ভিটামিন এ, সি, আয়রন ও
পটাশিয়াম যা স্থিতিস্থাপকতা এবং উজ্জলতা বাড়িয়ে দেয়। ত্বককে রাখে হাইড্রেট ও
ত্বাকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে চিয়া সিড অনেক গুরুত্বপূর্ন।
গ্যাসের সমস্যা দূর করেঃ চিয়া সিড খেলে আপনার কমবে গ্যাসের মতো
সমস্যা। এতে রয়েছে ফাইবারের অনুপাত যা আপনার মলত্যাগে সহায়তা করে ও নিয়মিত
মলত্যাগ হয়। নিয়মিত মলত্যাগ হলে আপনার গ্যাসের মতন সমস্যাও দূর হবে।
ভুড়ি কমাতে চিয়া সিডঃ আপনার যদি পেটে মেদ থাকে বা ভুড়ি থাকে তাহলে
চিয়া সিড খেয়ে আপনার মেদ কমাতে পরেন। ডায়টারি ফাইবারে ভরপুর এই চিয়া সিড যা
খেলে আপনার প্রতিনিয়ত পাচন প্রক্রিয়া ঠিক থাকার মাধ্যমে আপনার পেটের মেদ কমিয়ে
দেবে। আপনার মেদকে গলিয়ে দেবে এই চিয়া সিড। তাই প্রতিদিন খাবারে চিয়া সিড রাখতে
পারেন।
এছাড়াও চিয়া সিডের গুনাবলি বলে শেষ করা যাবে না যেমন চিয়া সিড ভালো ঘুম এনে
দেয়। শরীরের কোলন পরিষ্কার রাখে যার ফলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। হজমে সাহায়তা করে আপনার
যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তাহলে চিয়া সিড খেলে আপনার
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। তাছাড়াও আপনার ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে এই চিয়া সিড ও ব্লাড পেশার ঠিক রাখে।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারীতা
চিয়া সিড যেমন উপকার তেমন অপকারীতাও রয়েছে আপনি খুশিতে যদি ওজন কমাতে
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম এর বাইরে বেশি পরিমান খেয়ে নেন তাহলে হয়ে যেতে পারে
হীতে বিপরীত। আপনার ওজন কমাতে যেয়ে পরে যেতে পারেন নানা শরীরিক সমস্যাই। তাই
ওজন কমাতে ও অন্যান্য কাজের জন্য সঠিক পরিমান চিয়া সিড গ্রহন করুন। চলুন জেনে
নেওয়া যাক কি কি ক্ষতি করে।
- স্তন ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার
- হজমের সমস্যা
- খারাপ স্বাস্থ্য
- শর্করার মাত্রা বেশি কমে যাওয়া
- রক্ত চাপের উপর প্রভাব
- ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া
- অ্যালার্জির মতন সমস্যা
চিয়া সিড বেশি পরিমান গ্রহন করলে আপনার হতে পারে স্তন ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট
ক্যান্সারের মতো বড় রোগের সমস্যা। চিয়া সিড বেশি খাওয়াতে আপনার হজমের সমস্যা
হতে পারে এতে রয়েছে ফাইবার যা বেশি পরিমান গ্রহন করলে আপনার হজমপ্রক্রিয়া বাধা
সৃষ্টি হয়ে বদহজম হয়ে যেতে পারে। বেশি পরিমান খেলে আপনার পেটের ব্যাথা হতে পারে
তাই নিয়ম অনুযায়ী চিয়া সিড গ্রহন করুন।
তাছাড়া ওজন কমাতে যারা চিয়া সিড খেয়ে থাকেন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ন কিছু কথা
সেটি হলো আপনার ওজন কমাতে বেশি চিয়া সিড গ্রহন করবেন না কারন যদি বেশি গ্রহন
করেন তাহলে আপনার ওজন এমন ভাবে কমে যাবে যা পরে দেখতে খারাপ লাগবে স্বাস্থ্যের
জন্য তা খারাপ। নিয়ম অনুযায়ী চিয়া সিড গ্রহন করুন এতে আপনার শরীর ওজন কমে ফিট
থাকবে।
এই চিয়া সিড শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে কিন্তু আপনি যদি পরিমান মতো না
খান তাহলে উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। চিয়া সিড খেলে
আপনার রক্তে শর্করা বা চিনির মাত্র কমায় যা আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে
রাখে কিন্তু বেশি পরিমান খেলে চিনির মাত্রা একদম কমে যেতে পারে তাই
ডায়াবেটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহন করবেন।
যারা নিয়মিত নানা রোগের কারনে ঔষধ খান তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিয়া বীজ
খাবেন কারন এই বীজ বিভন্ন ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। চিয়া সিড
রক্ত পাতলা করে যা শরীরের জন্য ভালো। তবে যারা উচ্চ রক্ত চাপের জন্য ঔষধ খেয়ে
থাকেন যদি চিয়া অধিক পরিমান বেশি খেয়ে থাকেন তারা সাবধান আপনার উচ্চ রক্তচাপের
ঔষধ এর কাজে প্রভাব ফেলতে পারে এই চিয়া।
অনেকের অ্যালার্জির মতন সমস্যা থাকে আপনার এই বীজ খেয়ে যদি চুলকানী,
ফুসকুড়ী বা শ্বাসকষ্ট মতন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই খওয়া বন্ধ করে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিন। যারা গর্ভবতী মহিলা আছেন বা সদ্য মা হয়েছেন কারো পরামর্শে চিয়া
সিড খেতে চাচ্ছেন তার আগে অন্যের পরামর্শ না নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিয়া
সিড খাবেন।
তাই চিয়া সিড খাওয়ার আগে অবশ্যই পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন। অনেকের বেশি পরিমান
খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হয়ে যায় পরিমানের তুলনায় বেশি খেলে শরীরের পানির ঘাটতি দেখা
যায়। এইজন্য ডাক্তাররা বেশি পরিমান পানি খাওয়ার কথা বলে। তাই অবশ্যই নিয়ম মাফিক
চিয়া সিড খাবেন আমরা নিচে এর খাওয়ার নিয়ম কখন খাবেন কতটুকু খাবেন এই নিয়ে
আলোচনা করবো।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খওয়ার নিয়ম ও উপকারীতা
চিয়া সিড আমরা সবাই চিনি পুষ্টির পওয়ার হাউজ বলে বা সুপারফুড। যারা ওজন কমানোর
জন্য খাবেন তাদের জন্য খাওয়ার নিয়ম ও উপকার সম্পর্কে আলোচনা করব যেহেতু চিয়া
সিডের উপকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তারপরও চেষ্টা করব স্বাস্থ্যের জন্য চিয়া
সিড কেমন উপকার করে। ওজন কমাতে চিয়া সিড খওয়ার নিয়ম বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা
হলো।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম শুনুন প্রথমে বলি এই বীজের কোন স্বাদ নাই গন্ধ
নাই অনয়াশে খেতে পারবেন। আপনার ইচ্ছে মতন যেকোন খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে
পারবেন তবে শরবত টাইপ কিছু বানাতে পারলে ভালো হয়। এই বীজ মিনিমাম ৩০ মিনিট
ভিজিয়ে রাখুন। তারপর আপনি চাইলে আপনার পছন্দ খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
লেবুঃ দ্রুত ওজন কমানোর জন্য সকালে উঠে খালি পেটে ১ গ্লাস পানির
সাথে ২ চামচ চিয়া সিড ও ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে খেতে
পারেন। ভিজিয়ে রেখে তারপর আপনি চােইলে যেকোন সরবতের সাথে মিক্স করে খেতে
পারবেন। এতে আপনার ওজন কমে যাবে সাথে যাদের মেদ ভুড়ি আছে সেটাও আস্তে আস্তে
থাকবেনা।
স্মুথি বানানঃ আপনি চিয়া সিড ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন তারপর চাইলে
কাস্টার্ড, স্মুথির সাথে মিক্স করে খেতে পারেন এটি অনেক জনপ্রিয়। আপনি চাইলে
শসা, টক দই এক সাথে ব্লিন্ডারে মিক্স করে স্মুথি করে খেতে পারেন। আপনি ইসবগুলের
ভুসির সাথে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন।
সালাদঃ আমরা প্রতিনিয়ত খাবারের সময় বিভন্ন সালাদ বানিয়ে খায় আপনি
চাইলে সেইসব সালাদে চিয়া সিড ভেজানো জেল মিক্স করে খেতে পারেন।
দুধঃ আমরা অনেকে রাতে দুধ খায় আপনি চাইলে কুসুম দুধের সাথে ২ চামচ
চিয়া সিড ভেজানো জেল মিক্স করে খেতে পারবেন এতে মুখে স্বাদ পাবেন। দুধের সাথে
খাওয়া অনেক উপকার।
ফলের জুসঃ আমরা অনেকে ফলের জুস পছন্দ করি রাস্তা ঘাটে দেখি তারপরও
অনেকে আমারা বাসায় ব্লিন্ড করে ফলের রস বানাই আপনি চাইলে ফলের রসের সাথে ২ চামচ
চিয়া সিড একসাথে ব্লিন্ড করে খেতে পারেন।
নারকেলের পানিঃ নারকেলের পানি শরীরের যেমন উপকার তেমন অনেকে পছন্দ
করেন চাইলে আপনি নারকেলের পানির সাথে ২ চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখতে পারেন। ৩০
মিনিট ভিজিয়ে রাখার পর খেয়ে নিন। নারকেলের মিষ্টি পানির সাথে মুখে স্বাদ লাগবে।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকার সম্পর্কে জানলেন। মুখের স্বাদের জন্য আপনাদের
বিভিন্ন রকম আইটেমের কথা বল্লাম। বাসায় আপনি চাইলে আইটেম গুলো খেয়ে দেখতে পারেন
ভালো লাগবে। আর না চাইলে আপনি নরমাল পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি
পেটে খেতে পারেন। অথবা আপনি চাইলে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে
পারেন।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার সময়
অনেকে আছেন তারা যানেন না চিয়া সিড কখন খাবেন কখন খেলে এর উপকার ভালো পাওয়া
যাবে। চিয়া সিড খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো সকালে খালি পেটে ও রাতে খাবারের পর
ঘুমানো যাওয়ার আগে।অনেকে আছেন চিয়া সিড কাঁচাই খেয়ে থাকেন কিন্তু ভুল করেও
কাঁচা খাবেন না কাচা খাওয়া ঠিক না। চিয়া বীজ খাওয়ার জন্য রাতে ১ গ্লাস
পানিতে
২ চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখুন। যারা ওজন কমানোর জন্য খাবেন তারা সকালে খালি
পেটে চিয়া বীজ ভেজানো পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাবেন। লেবুর রস থাকলে
আপনার পেটে থাকা ভুড়ি বা মেদ গলিয়ে দিতে সাহায্য করে লেবু। তাই লেবুর রস মিশিয়ে
খেলে ভালো ফলাফল পাবেন। খালি পেটে সকালে খেলে আপনার দ্রুত ওজন কমতে শুরু করবে।
গর্ভাবস্থাই চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
হ্যাঁ গর্ভাবস্থাই চিয়া সিড খাওয়া অনেক উপকার বিশেষ করে পেটের বাচ্চার পুষ্টির
জন্য অপরীহার্য এই চিয়া বীজ। চিয় সিডে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড,
ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন. খনিজ, আয়রন ইত্যাদি যা গর্ভাবস্থাই
বাচ্চার জন্য অনেক উপকার। আপনি বা আপনার ওয়াইফ যদি গর্ভাবস্থাই থাকে তাহলে চিয়া
বীজ খেতে পারেন। চলেন নিয়ম গুলো জেনে নেই।
গর্ভাবস্থাই প্রতিদিন ১ থেকে ২ চামচ চিয়া বীজ খাবেন। ১ গ্লাস পানিতে ১
থেকে ২ চামচ চিয়া বীজ মিশিয়ে ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাখুন এরপর পানিসহ খেয়ে
ফেলুন। গর্ভাবস্থাই মায়েদের প্রতিদিন ২৪ গ্রামের মতো চিয়া বীজ খেতে পারবেন
এর বেশি না। চিয়া বীজে থাকা ক্যালসিয়াম ও আয়রন গর্ভবতী মহিলাদের জন্য
স্বাস্থ্যকর। গর্ভবতী মহিলা ও বাচ্চার দুইজনের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার এই
চিয়া বীজ।
চিয়া সিড খেলে কি ওজন কমে
হ্যাঁ চিয়া সিড খেলে সত্যি আপনার ওজন দ্রুত কমে যাবে। আমাদের এই পুরো আর্টিকেল
চিয়া সিড নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম থেকে শুরু করে
শেষ পর্যন্ত। আপনি ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ন আর্টিকেল পরলে বুঝতে পারবেন সূচিপত্রে
কথাই কি বিষয়ে আলোচান করা হয়েছে। তারপরও সংক্ষেপে কিছু গুরুত্বপূর্ন আলোচনা করা
যাক।
এক গবেষনাই দেখা যায় যে চিয়া সিডে এমন কিছু উপাদান আছে যা প্রতিনিয়ত পরিমান মতো
গ্রহন করলে শরীরে দ্রুত ওজন কমিয়ে আপনাকে করে তলে ফিট। চিয়া সিডের উপদান গুলো
আপনার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে ফলে খিদে লাগেনা। আবার খাওয়ার পরে চট করে খিদে
আসেনা। চিয়া সিড খাওয়ার অভ্যাসের মাধ্যমে কম খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে
যাবে।
তাই দ্রুত ওজন কমাতে সকালে খালি পেটে চিয়া সিড মেশানো ১ গ্লাস পানির সাথে ২
চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি, ওজন ও ভুড়ি বা মেদ কমে
যাবে। এবং রাতে খাবারের পর চিয়া সিড মেশানো শুধু পানি বা ফলের জুসের সাথে
খাবেন। চিয়া সিডে থাকা ফাইবার হজম শক্তি ঠিক করে ক্ষুদা নিয়ন্ত্রন ও মেটাবলিক
সক্ষমতা বাড়িয়ে আপনাকে করে তুলে ফিট।
চিয়া সিড খেলে কি হয়
চিয়া সিড খেলে মিলবে ১৫টি উপকারিতা। এছাড়াও আমরা বিস্তারিত উপরের আলোচনা করেছি
যদি পরে থাকেন তাহলে বুঝতে পেরেছেন। এখন আমরা জানবো চিয়া সিড খেলে আমাদের শরীরে
কি হয় বা কি কি উপকার হয়। আমাদের আর্টিকেল ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম নিয়ে
আলোচনা করা আছে। এখন চিয়া সিড খেলে কি কি হয় চলুন দেখি।
- চিয়া সিড খেলে হাড় মজবুত হয়। ক্যালসিয়ম, ফসফরাস ও ম্যাঙ্গানিজ থাকে যা হাড়কে শক্তিশালি করে।
- চিয়া বীজ শরীর থেকে পানি শোষন করে ফলে কম ক্যালোরি খাওয়া হয় এতে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় বয়সের ছাফ কমিয়ে দেয়।
- যাদের ব্রনের সমস্যা এই বীজে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ব্রনকে নিরাময় করে। ওমেগা-৩ থাকায় ত্বককে রাখে হাইড্রেটেড।
- রক্তে শর্করার হার কমায় ডায়াবেটিস এর ঝুকি কমায়।
- চিয়া বীজে ফাইবার থাকায় হজমশক্তি ভালো হয়।
- হৃদরোগের ঝুকি কমায়।
- ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- শক্তি বৃদ্ধি করে, পুষ্টিতে ভরপুর।
- হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
- ওজন দ্রুত কমাতে ব্যাপক সাহায্য করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের স্ট্রেস কমায়। দৃর্ঘমেয়াদী রোগ থেকে রক্ষা করে।
- শরীরের প্রদাহ কমাতে উপকারী এই চিয়া বীজ।
- পেশী মজবুত ও বৃদ্ধি করে।
- সিলিয়াক রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের জন্য চিয়া বীজ উপকারী।
তাই বোঝাই যাই চিয়া সিড ডাক্তাররা কেন খেতে বলে। আপনি চাইলে আপনার প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকায় চিয়া বীজ রাখতে পারেন এতে আপনার যে সমস্যার কারনে খাবেন তা
অবশ্যই নিরাময় হয়ে যাবে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর খাবেন কারন
প্রচুর পুষ্টি থাকায় প্রয়োজন অনুযায়ী বেশি গ্রহন করা যাবেনা আপনার শরীরে চাহীদা
অনুযায়ী পুষ্টি গ্রহন করতে হবে।
চিয়া সিড এর বাংলা নাম
চিয়া সিড এর বাংলা নাম কি অনেকে জানেন না। অনেকে চিয়া বীজকে তোকমা বীজ ভেবে বসে
থাকেন কিন্তু এই দুই বীজ দুটোই আলাদা জিনিস। তোকমা বীজ আলাদা আর
চিয়া বীজ আলাদা। দুটো পানিতে মিশালে দেখবেন আলাদা ভাব। যেমন চিয়া
বীজ পানিতে ভেজালে দেখবেন আবরন ছোট আর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র। আর তোকমা
বীজ ভেজানোর পর দেখবেন আবরন গুলো বরো।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (BARI) অনুমোদন অনুসারে, চিয়া সিড এর বাংলা
নাম হচ্ছে চিয়া বীজ। বাঙ্গালীরা এই বীজকে বাংলা অর্থে পুষ্টি বীজ বা
শক্তি বীজ হিসেবে চিনে থাকে। এই বীজ আগে থেকেই দক্ষিণ মেক্সিকো,
দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকোতে অনেক জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও
বর্তমানে এই বীজের জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চিয়া সিড দাম কত কোথায় পাওয়া যায় 2024
চিয়া সিড দাম কত কোথায় পাওয়া যায় 2024 চিয়া সিড মূলত বাইরের দেশের প্রডাক্ট তবে
বাংলাদেশে ২ ধরনের চিয়া সিড পাবেন একটি হলো কালো চিয়া সিড ও সাদা চিয়া সিড।
কালো চিয়া সিড এর ৫০০ গ্রাম এর দাম ৩০০ থেকে ১২০০ টাকা এবং ১ কেজির দাম ৬০০
থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। সাদা চিয়া সিড ৫০০ গ্রাম এর দাম ৪০০ থেকে ১৩০০ টাকা এবং
১ কেজির দাম ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে।
বাংলাদেশের ভালো মানের চিয়া সিড যে কোন সুপার শপ গুলোতে পেয়ে যাবেন। বা বাজারে
বড় মদি খানা দোকান গুলোতে পাবেন তারপরে ফলের দোকানে পাবেন। ভালো মানের ব্রান্ড
অনুযায়ী দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। ভালো মানের চিয়া সিড পেতে চাইলে অনলাইন
মার্কেটপ্লেস গুলোতে দেখতে পারেন। তবে সরাসরী দেখে কিনাই ভালো।
ওজন কমাতে চিয়া সিড এর শেষ কথা
চিয়া সিড এর পুষ্টি গুন অনেক। আপনি ওজন কমাতে চিয়া সিড খেতে পারেন তবে
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। ওজন কমাতে ও সুস্থ্য শরীর বজায় রাখার জন্য
চিয়া সিড গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এতক্ষন আমাদের আর্টিকেল পড়ার জন্য
আপনাকে ধন্যবাদ এরকম গুরুত্বপূর্ন আর্টিকেল আমরা প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকি।
নেক্সাস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url