টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সঠিক গাইড

ভূমিকা

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই । সঠিক ধারণা না জানার কারনে অনেকে ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। তাই ব্যবসা করতে চাইলে এর সঠিক পালন পদ্ধতি জানা জরুরী।

টাইগার-মুরগি-পালন-পদ্ধতি

টাইগার মুরগি পালন কিভাবে করতে হয় সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটিতে সম্পূর্ণ বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। যার ফলে আপনারা অনেক অজানা বিষয় গুলো জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো।

সূচিপত্রঃ টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে মুরগি পালন প্রিয় লোকদের অবশ্যই জানা জরুরী। টাইগার মুরগি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে, তবে এর জন্য সঠিক পদ্ধতি এবং যত্ন প্রয়োজন। টাইগার মুরগি মূলত মাংসের জন্য পালন করা হয়, তাদের মাংস খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। এই মুরগির শারীরিক গঠন শক্তিশালী, তাই এগুলি বিভিন্ন পরিবেশে টিকে থাকতে পারে।

টাইগার মুরগির জন্য একটি নিরাপদ এবং আরামদায়ক ঘর তৈরি করতে হবে। যাতে ঘরটিতে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল করতে পারে। এবং ঘরটি পরিষ্কার এবং শুকনো রাখতে হবে। মুরগিগুলির জন্য একটি সঠিক খাদ্য নিশ্চিত করা অনেক জরুরী, যা প্রোটিন, ভিটামিন, এবং খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। খাদ্যের মধ্যে দানাদার খাদ্য, ভিটামিন, খোল, চাল, ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

মুরগির স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিয়মিত টিকা প্রদান করতে হবে এবং মুরগির পরিবেশ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। মুরগি শিকড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো হলে সেগুলি মাটি থেকে রোগ-বালাই ছড়াতে পারে, তাই সুরক্ষার জন্য নিয়মিত ফ্লোর পরিষ্কার করা অনেক জরুরি। এছাড়া, মুরগির জন্য পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং পর্যাপ্ত আলো প্রদান করতে হবে। মুরগির বয়স অনুযায়ী তাদের খাদ্য পরিমাণ এবং উপাদান সামঞ্জস্য করে খাওয়াতে হবে।

টাইগার মুরগি চেনার উপায়

টাইগার মুরগি চেনার কিছু সহজ উপায় রয়েছে। যা তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও আচরণে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়ে থাকে। টাইগার মুরগির দেহের গঠন শক্তিশালী এবং মধ্যম সাইজের হয়ে থাকে। তাদের মুরগির শরীর সাধারণত উজ্জ্বল সোনালী, বাদামী এবং কালো রঙের মিশ্রণে হয়ে থাকে, যা তাদের নামের সাথে অনেকটাই মিলে যায়। এছাড়া, টাইগার মুরগির পাখির পালক সাধারণত একটু মোটা এবং উজ্জ্বল হয়ে থাকে।

পুরুষ টাইগার মুরগির মাথাতে বড় এবং উজ্জ্বল রঙের সিঁড়ি বা ঝুঁটি থাকে। যার ফলে তাদের সহজেই চেনা যায়। মুরগির পায়ের পেছনে কিছুটা লম্বা পাখনা থাকে, যা তাদের দৃঢ় এবং কার্যকরী ভাবে দাঁড়ানোর জন্য সাহায্য করে থাকে। তাদের আচার-আচরণও একটু অন্যরকম হয়। এরা স্বাভাবিক ভাবে সাহসী এবং কখনও কখনও আক্রমণাত্মকও হতে পারে। এই মুরগি খুবই চঞ্চল প্রকৃতির।

এরা খাদ্য সংগ্রহে বেশ দ্রুত, যা তাদের চেনার আরও একটি উপায়। পরিশেষে, টাইগার মুরগির গায়ের রঙ গাঢ় রঙের এবং শক্তিশালী শারীরিক গঠন থেকে সহজেই চেনা যায়, বিশেষ করে পুরুষ মুরগির ক্ষেত্রে তাদের মাথায় থাকা ঝুঁটি দেখে চেনা যায়, যা এদের মাথায় সিংহের মতো দেখতে সিঁড়ি বা শিং এর ন্যায়। এই সকল ধরনের বৈশিষ্ট্য দেখে আমরা সহজেই এই টাইগার মুরগি চিনতে পারবো।

টাইগার মুরগির বৈশিষ্ট্য

টাইগার মুরগির বৈশিষ্ট্য অনেক রয়েছে। টাইগার মুরগি একটি শক্তিশালী মুরগি এবং দৃঢ় মাংসপালক জাতের একটি মুরগি, যা সাধারণত তার মাংসের জন্যই পরিচিত। এই মুরগির বৈশিষ্ট্যগুলো বেশ ইউনিক বা অন্য রকমের।  এবং তার বৈশিষ্ট্য গুলোই তাকে অন্যান্য মুরগির জাত থেকে আলাদা করে থাকে। এই টাইগার মুরগির বৈশিষ্ট্য গুলো জানলেই এই মুরগি পালন আমাদের কাছে সহজ হয়ে যাবে। এর বৈশিষ্ট্য গুলো আলোচনা করা হলোঃ

টাইগার মুরগির দেহ গঠন শক্তিশালী এবং পেশীভিত্তিক হয়ে থাকে। পুরুষ মুরগির তুলনায় মহিলা মুরগি একটু ছোট হয়ে থাকে। তাদের পালক রঙ সাধারণত সোনালী, বাদামী এবং কালো রঙের মিশ্রণে গঠিত, যা "টাইগার" নামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পুরুষ মুরগির মাথায় বড় সিঁড়ি বা ঝুঁটি থাকে, যা তাদের আরও দৃশ্যমান করে তোলে তাদের চিনতে। টাইগার মুরগি অত্যন্ত কর্মচঞ্চল হয়। এই মুরগি দ্রুত চলাফেরা করে থাকে

টাইগার মুরগি শিকার বা খাদ্য সংগ্রহের জন্য খুবই দক্ষ হয়ে থাকে। তাদের শিকার করার ক্ষমতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ভালো। এছাড়া, টাইগার মুরগি খুবই ফলপ্রসু, এবং ভালো মাংস উৎপাদন করে থাকে। তবে তাদের খাদ্যের জন্য ও পরিবেশের জন্য সঠিক যত্ন এবং পরিচর্যা করা অনেক প্রয়োজন। সার্বিকভাবে, টাইগার মুরগি তার দৈহিক শক্তি, মাংসের গুণমান এবং প্রজনন ক্ষমতার জন্য মানুষের কাছে জনপ্রিয়।

টাইগার মুরগির রোগ ও প্রতিকার

টাইগার মুরগির রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ টাইগার মুরগি যেমন শক্তিশালী মাংসপালক একটি জাত, তেমন কিছু রোগের শিকারও হতে পারে। সাধারণত, মুরগির মধ্যে কোনো রোগ দেখা দিলে তা দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে, তাই নিয়মিত এর নজর রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। টাইগার মুরগির মধ্যে অক্সিডেন্টাল শক বা দুর্ঘটনাজনিত আঘাত হতে পারে। এর থেকে রক্ষা পেতে তাদের বাসস্থান নিরাপদ ও পরিষ্কার রাখতে হবে। 

মুরগির মধ্যে কুকুন ফ্লু বা শ্বাসযন্ত্রের রোগ খুবই সাধারণ একটি বিষয়। এটি ঠাণ্ডা বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ফলে ঘটে থাকে। এর প্রতিকার হিসেবে, তাদের ঘরটি শুকনো ও পরিষ্কার রাখতে হবে এবং ভালো বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। কৃমির আক্রমণও এক ধরনের রোগ এদের মধ্যে হতে পারে, যা তাদের পেটের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। কৃমির উপস্থিতি শনাক্ত হলে তার প্রতিকারের জন্য পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেডিসিন দিতে হবে।

মুরগির মধ্যে ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা হতে পারে, যা তাদের খাদ্যের মান খারাপ হলে হয়ে থাকে। সঠিক খাদ্য অর্থাৎ ভালো মানের খাদ্য ও পরিমাণে জল সরবরাহ তাদের সুস্থ রাখে। মুরগির স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত টিকা প্রদান করতে হবে। এবং এর পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। রোগ হলে দ্রুত চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে বড় কোনো ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা জানতে হবে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে গেলে। টাইগার মুরগির জন্য সঠিক এবং পুষ্টিকর খাবার প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই মুরগি পালন করার ক্ষেত্রে। যাতে তারা সুস্থ থাকে এবং ভালো মাংস উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। এখানে কিছু প্রস্তাবিত খাবার তালিকা নিয়ে আলোচনা করবো। যা নিতে বিস্তারিত ভাবে দেওয়া হলোঃ

দানাদার খাদ্য বা গ্রেইন ফিডঃ টাইগার মুরগির জন্য প্রধান খাদ্য হলো দানাদার খাদ্য, যা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং খনিজে সমৃদ্ধপূর্ণ। সাধারণত চাল, গম, মুগ ডাল, সয়াবিন, এবং মিষ্টি আলু যোগ করা হয়ে থাকে এই খাদ্যের মধ্যে।

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্যঃ তাদের জন্য সেরা পুষ্টি নিশ্চিত করতে শাক-সবজি খাবার হিসেবে দেওয়া ভালো উপায়। যেমনঃ পালং, শসা, এবং গাজর দেওয়া যেতে পারে। এগুলি ভিটামিন এবং খনিজে পূর্ণ খাবার।

প্রোটিনঃ মুরগির জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই মাছের আটা, এবং সয়াবিনের মিশ্রণ দেওয়া যেতে পারে।

ক্যালসিয়ামঃ ডিম উৎপাদনের জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য একটি উপাদান। তাই তাদের খোল, চুন, বা অস্ট্রেলিয়ান চুন খাবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

পানিঃ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার এবং তাজা পানি সরবরাহ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাতে তারা পানি পান করে অনেক তৃপ্তি পেতে পারে। পানি নিরাপদ না হলে সেই পানি ব্যবহার করলে অর্থাৎ পান করলে তা থেকে পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ হতে পারে। তাই পরিষ্কার পানি দেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

গ্রিট এবং মাটিঃ মুরগির হজমের সাহায্য করতে ছোট পাথর বা গ্রিট প্রদান করা উচিত, যাতে তারা খাদ্য ভালোভাবে হজম করতে সক্ষম হয়।

এই খাবারগুলো টাইগার মুরগির স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি, তাদের মাংস ও ডিম উৎপাদনে অনেকটাই সহায়তা করবে। আমরা যারা এই জাতের মুরগি পালন করি বা করতে আগ্রহী তাদের উচিত উপরের খাবারের তালিকা অনুযায়ী খাবার প্রদান করা। যাতে করে মুরগির স্বাস্থ্য উন্নত করতে অনেকটা উপকারী হতে পারে।

টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা

টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা বলতে টাইগার মুরগির রোগ প্রতিরোধ করতে এবং এর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কিছু ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে এই বিষয়টিকে বলা হয়েছে। এই ঔষধগুলো সাধারণত রোগের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তারপরেও এখানে কিছু সাধারণ ঔষধের তালিকা দেওয়া হলো, তবে মুরগির জন্য এই ঔষধ গুলো ব্যবহারের আগে অবশ্যই পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ  ভুল ভাবে ব্যবহারের ফলে ক্ষতি হতে পারে।

অ্যান্টিবায়োটিকঃ

  • টায়ামুলিন (Tiamulin): শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং পেটের সমস্যার জন্য ব্য়বহার করা হয়ে থাকে।
  • এমপ্রোফেন (Enrofloxacin): ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা কৃমি সংক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ভিটামিন এবং মিনারেল মিশ্রণঃ

  • ভিটামিন A, D, E: মুরগির সাধারণ স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং ডিম উৎপাদন বাড়াতে ব্যবহার করা হয়।
  • কালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট: ডিমের খোল শক্ত করতে এবং মাংসের গঠন শক্তিশালী করতে ব্যবহার করা হয়।

অ্যান্টিপ্যারাসাইটিক্সঃ

  • আইভারমেকটিন (Ivermectin): প্যারাসাইট বা কৃমি দূর করতে ব্যবহার হয়।
  • ফেনবেনডাজোল (Fenbendazole): কৃমির আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত করা হয়।

এন্টি-ফাংগালঃ

  • কেটোকোনাজোল (Ketoconazole): ফাংগাল সংক্রমণ (যেমনঃ পায়ের ফুসকুড়ি) প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়।

প্রোবায়োটিকসঃ

  • এস্কোল (Escherichia coli Probiotics): হজম ব্যবস্থা উন্নত করতে এবং অন্ত্রের সমস্যা সমাধানে সহায়ক হয়ে থাকে।

টিকা (Vaccines):

  • Newcastle Disease Vaccine: নিউক্যাসল ডিজিজ প্রতিরোধ করতে।
  • Avian Influenza Vaccine: বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে।

টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে

টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে? টাইগার মুরগি সাধারণত ৪-৫ মাস বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে থাকে। তবে এটি বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে, যেমন পরিবেশ গত দিক দিয়ে, খাদ্য এবং তাদের যত্নের ওপরও এটি নির্ভর করে থাকে। টাইগার মুরগির প্রজনন ক্ষমতা অনেক ভালো, এবং তাদের ডিম প্রযোজনার জন্য উপযুক্ত বয়সে পৌঁছালে তারা নিয়মিত ডিম দিয়ে থাকে।

টাইগার-মুরগি-পালন-পদ্ধতি

ডিমের উৎপাদন সাধারণত মুরগির স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির ওপর নির্ভর করে থাকে। যদি মুরগির খাদ্য সুষম এবং সঠিক পরিমাণে পুষ্টি প্রদান করা হয়ে থাকে, তবে তারা ভালো মানের এবং নিয়মিত ডিম পাড়া শুরু করে। খাবারের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, এবং খনিজ উপাদান থাকা দরকার, যাতে ডিমের উৎপাদন অনেকটা বৃদ্ধি পায়। ডিম উৎপাদন বাড়াতে চাইলে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি গুলো সঠিক ভাবে অবলম্বন করতে হবে।

মুরগির পরিবেশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি তাদের সঠিক অবস্থানে রাখা হয়, যেমন পরিষ্কার ও শীতল স্থানে, এবং পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পাওয়া যায় এরকম স্থানে, তবে তারা দ্রুত ডিম পাড়া শুরু করবে এবং এতে ভালো ফলন দেখা দিবে। অতএব, টাইগার মুরগি সাধারণত ৪-৫ মাস বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে থাকে এবং তাদের ডিম দেওয়ার পরিমাণ তাদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

টাইগার মুরগি নিয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগি কতদিনে এক কেজি হয়?

উত্তরঃ টাইগার মুরগি সাধারণত ৪-৫ মাস বয়সের মধ্যে ১ কেজি ওজন অর্জন করে থাকে। তবে, এটি মুরগির খাদ্য, পরিবেশ এবং যত্নের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। সঠিক পুষ্টি এবং ভালো পরিবেশে তারা দ্রুত বেশ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগির ওজন কত হয়?

উত্তরঃ টাইগার মুরগি পুরুষ মুরগি ওমহিলা মুরগি ভেদে আলাদা হয়ে থাকে। পুরুষ মুরগির ক্ষেত্রে এর ওজন সাধারণত ২ কেজি - ২.৫ কেজি হয়ে থাকে। এবং মহিলা মুরগির ওজন ১.৫-২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

টাইগার-মুরগি-কত-টাকা-কেজি

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগির কেজি কত টাকা?

উত্তরঃ টাইগার মুরগির দাম সাধারণত প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এটি বাজারের পরিস্থিতি ও স্থান ভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া, মুরগির বয়স এবং স্বাস্থ্যও তার দামকে প্রভাবিত করে থাকে। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এর দাম আরও বেশিও হতে পারে।

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগি কি কি রোগ হয়?

উত্তরঃ টাইগার মুরগি বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে, যেমন শ্বাসযন্ত্রের রোগ, কৃমি সংক্রমণ এবং ডায়রিয়া। এছাড়া, ফাংগাল ইনফেকশন এবং প্যারাসাইট আক্রমণও হয়ে যেতে পারে। এই রোগ গুলো সঠিক ভাবে পরিচর্যা, টিকা এবং খাদ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়।

প্রশ্নঃ টাইগার মুরগি বড় হতে কতদিন লাগে?

উত্তরঃ টাইগার মুরগি সাধারণত ৪-৬ মাস বয়সে পূর্ণ আকারে পৌঁছে যায় এবং তাদের মাংসের জন্য প্রস্তুত হয়। সঠিক খাদ্য, যত্ন এবং সঠিক পরিবেশে তারা দ্রুত বেড়ে ওঠে। তবে, এটিও  মুরগির স্বাস্থ্য এবং যত্নের ওপর এটি নির্ভরশীল।

টাইগার মুরগি পালন লাভজনক কিনা

টাইগার মুরগি পালন লাভজনক কিনা? টাইগার মুরগি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে, তবে এর জন্য সঠিক পরিচর্যা এবং উপযুক্ত পালন পদ্ধতির প্রয়োজন রয়েছে। এই মুরগি প্রধানত মাংস উৎপাদনের জন্য পালিত হয়ে থাকে, এবং তাদের মাংস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা রয়েছে। সাধারণত, টাইগার মুরগি ৪-৫ মাস বয়সের মধ্যেই ১ কেজি বা তার বেশি ওজন অর্জন করে নেয় এবং এক কেজি মাংসের দামও বেশ ভালো।

লাভজনক হওয়ার জন্য সঠিক খাদ্য, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং পরিষ্কার পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালো খাদ্য সরবরাহ করাটাও লাভ জনক হতে গেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যেমন দানাদার খাদ্য, শাক-সবজি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ উপাদান সমূহ, তাদের দ্রুত বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখে যার ফলে লাভবান হওয়া অনেক অংশে বেড়ে যায়। এছাড়া, মুরগির বাসস্থানও নিরাপদ এবং সুরক্ষিত হওয়া উচিত যাতে তারা ভালো ভাবে থাকতে পারে।

তাছাড়া, রোগবালাই থেকে মুরগিকে রক্ষা করতে নিয়মিত টিকা প্রদান ও পশু চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিচর্যা করলে এবং উপযুক্ত বাজার মূল্য পেলে, টাইগার মুরগি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে, তবে এটি নির্ভর করে থাকে পরিচালনার দক্ষতা এবং বাজারে মানুষের চাহিদার উপর। তবে বলা যায় অন্য মুরগির থেকে এই টাইগার মুরগি গুলো শক্তিশালী হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া সম্ভব।

শেষকথা

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি নিয়ে আজকের পোষ্টটিতে সম্পূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। আজকে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি নিয়ে যে বিষয় গুলো  আলোচনা করা হয়েছে সেই বিষয় গুলো মানতে পারলে আশা করি আপনারা লাভবান ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন।

আজকের এই পোস্টে কোনো রকম ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকলে অবশ্যয় ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমাদের সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এরকম আরও তথ্যবহুল এবং ইনফরমেটিভ পোষ্ট পড়তে এই সাইটটি ফলো করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নেক্সাস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url